Skip to content

হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ | হিমবাহের সঞ্চয়কার্য কি

হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ

ভূগোলের আগের পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করেছি হিমবাহের ক্ষয়কার্যের সম্পর্কে, আজ আমরা আলোচনা করবো হিমবাহের সঞ্চয়কার্য সম্পর্কে, এই পোস্ট টিতে আমরা জানবো হিমবাহের সঞ্চয় কার্য কাকে বলে?, হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ এর বর্ণন, হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে কি কি ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় ইত্যাদি।

হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ

হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ গুলিকে সাধারণত দুভাগে ভাগ করা হয়-

১) পর্বতের উপরিভাগে সঞ্চয়ের ফলে ভূমিরূপ

২) পর্বতের পাদদেশে বা নিম্নভূমিতে সঞ্চয়ের ফলে ভূমিরূপ।

[1] পর্বতের উপরিভাগে সঞ্চয়ের ফলে ভূমিরূপ

♦গ্রাবরেখা : উপত্যকা হিমবাহের সঙ্গে যেসব পাথর, নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতি বাহিত হয়ে ধীরে ধীরে হিমবাহের নীচে, দু-পাশে ও সামনে একটু একটু করে জমা হতে থাকে, সেগুলিকে বলা হয় হিমগ্রাব বা মোরেন বা গ্রাবরেখা। উদাহরণ—সিকিমের লাচুং – এ এই প্রকার গ্রাবরেখা দেখা যায়।

♦কেম : হিমবাহের শেষ প্রান্তে বা প্রান্ত গ্রাবরেখায় যখন বরফ গলে যায়, তখন হিমবাহের মধ্যে থাকা পাথর, নুড়ি, কাঁকর, কাদা প্রভৃতি স্তূপাকারে জমে ত্রিকোণাকার বদ্বীপের মতো ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। একে কেম বলা হয়। কেম ধাপে ধাপে গঠিত হলে তাকে কেম সোপান (kame terrace) বলা হয়।

[2] পর্বতের পাদদেশে বা নিম্নভূমিতে সঞ্চয়ের ফলে ভূমিরূপ

♦আগামুক : হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ গুলির মধ্যে অন্যতম হলো আগামুক। হিমবাহের সঙ্গে নানান আকৃতির শিলা যখন বহুদূর থেকে বাহিত হয়ে পর্বতের পাদদেশ অঞ্চলে সতি হয় , তখন তাকে বলা হয় আগামুক বা ইরাটিক। এই শিলার সঙ্গে স্থানীয় শিলার বৈশিষ্ট্যের কোনো মিল থাকে না। এই ধরনের ভূমিরূপ সিকিমে দেখা যায়।

♦এসকার : অনেক সময় হিমবাহ – বাহিত পাথর, বালি, কাকর প্রভৃতি পর্বতের পাদদেশে সঞ্চিত হয়ে স্বল্প উঁচু আঁকাবাঁকা শৈলশিরা গঠন করে। একে বলা হয় উদাহরণ — ফিনল্যান্ডের পুনকাহারয়ু এসকার এসকারটি বিখ্যাত।

♦বোল্ডার ক্লে : হিমবাহ গলে যাওয়ার পর তার নীচে হিমবাহ – বাহিত বালি, কাদা ও পাথর একসঙ্গে সঞ্চিত হলে তাকে বোল্ডার ক্লে বা হিমকর্দ বলা হয়।

 

আরও পড়ুন:-

 

ড্রামলিন: হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ গুলির মধ্যে অন্যতম হলো ড্রমলিন। টিলার মতো উঁচু হয়ে বোল্ডার ক্লে সঞ্চিত হলে তাকে দূর থেকে দেখতে ওলটানো নৌকোর মতো মনে হয়। একে ড্রামলিন বলা হয়। উদাহরণ সুইডেনে এইরূপ ভূমিরূপ দেখা যায়। ড্রামলিন অধ্যুষিত অঞ্চলকে বলা হয় ‘ ডিমের ঝুড়ি ভূমিরূপ ‘ (basket of eggs relief )।

♦বহিঃধৌত সমভূমি: প্রান্ত গ্রাবরেখার শেষে যেখানে নদীর উৎপত্তি হয়, সেখান থেকে বরফগলা জলপ্রবাহের মাধ্যমে হিমবাহ-বাহিত নুড়ি, কাকর, বালি প্রভৃতি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে সঞ্চিত হলে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, সেই সমভূমিটিকে বলা হয় বহিঃধৌত সমভূমি বা আউট-ওয়াশ প্লেন। বহিঃধৌত সমভূমির মধ্যস্থিত বিশালাকৃতির বরফখণ্ড গলে গিয়ে যেসব গহ্বরের সৃষ্টি হয় সেগুলিকে বলা হয় কেট্ল। পরবর্তীকালে ওইসব গহ্বরে হিমবাহ গলা জল জমে যে হ্রদের সৃষ্টি হয় , সেই হ্রদকে বলা হয় কেট্‌ল হ্রদ।

♦নব : হিমবাহ বাহিত নুড়ি , শিলাখণ্ড প্রভৃতি জলপ্রবাহের সঙ্গে বাহিত হয়ে বহিঃধৌত সমভূমির ওপর টিলার আকারে অবস্থান করলে সেই টিলাগুলিকে নব বলে।

Covered Topics:- হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ, হিমবাহের সঞ্চয় কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ, হিমবাহের সঞ্চয় কাজ কাকে বলে, ড্রামলিন কাকে বলে?, আগামুখ কি, গ্রাবরেখা চিত্র, হিমবাহের সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত বিভিন্ন প্রকারের গ্রাবরেখা সঞ্চিত বর্ণনা দাও

Share this

Related Posts

Comment us

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook Page